রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
দখলবাজি আর চাঁদাবাজির কারণে ছাত্র রাজনীতিকে এখন আর মানুষ আগের মতো সম্মানের চোখে দেখে না বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ছাত্র রাজনীতিতে অশুভ ছায়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
২৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ষষ্ঠ সমাবর্তন-২০২৩’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের আইনে চলে কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অপব্যবহার করে। একটা শ্রেণি নিজেদের সুযোগ সুবিধা ও আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। ক্ষমতা ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় ও ছাত্রদের ব্যবহার করতেও কুণ্ঠাবোধ করেন না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ইদানিং পত্র-পত্রিকা খুললেই দেখা যায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজির নেতিবাচক খবর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপাচার্য ও শিক্ষকদের সংশ্লিষ্টতার খবর বড় করে ছাপা হয়ে থাকে।
আব্দুল হামিদ বলেন, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও আমলাদের সমন্বিত উদ্যোগে একটি দেশ উন্নতি ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়। কিন্তু, সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সার্কভুক্ত দেশের অর্থনীতি দেউলিয়াত্ব নিয়ে সেই দেশের একজন মন্ত্রীর খবর প্রকাশিত হয়েছে। অর্থনীতির এ দেউলিয়াত্বের জন্য আমলা, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের চক্রকে দায়ী করা হয়েছে। এ চক্রের অশুভ আঁতাত যে কোনো দেশের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা, মূল্যবোধের শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
সমাবর্তনে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, দুর্নীতিবাজরা অবৈধভাবে নিজেদের সমৃদ্ধ করে এবং রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, বিচারনীতি এবং এমনটি মৌলিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে এক অসহনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করে। তারা গণতন্ত্রবিরোধী, তারা রাষ্ট্রবিরোধী, জনগণবিরোধী, জাতিবিরোধী, মানবতাবিরোধী আর ঘৃণিত। আপনারা কোনো কারণেই নিজেদের ওই দলে অন্তর্ভুক্ত করবেন না। তাই সবার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, অর্পিত দায়িত্বের প্রতি সর্বোচ্চ সততা, ভালোবাসা, একাগ্রতা ও বিশ্বাস রেখে মানুষকে নিরলস সেবা দিয়ে যাবেন। দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করবেন, ন্যায় বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলবেন। দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রহিমা কনিজের সঞ্চালনায় সমাবর্তনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। সমাবর্তনে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ- উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক।
এবারের সমাবর্তনে ১৫ হাজার ২২৩ জন গ্রাজুয়েট অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে নিয়মিত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী ১১ হাজার ৪৪৬ জন, এমফিল ডিগ্রির ৩৪ জন, পিএইচডি সম্পন্নকারী ২৮১ জন এবং সাপ্তাহিক কোর্সের (স্নাতকোত্তর) তিন হাজার ৪৬২ জন। এছাড়া সমাবর্তনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে সবগুলো বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরধারী ১৬ জন শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।